বিজ্ঞান প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়, এটা নিয়ে দুঃখ? একটা পরিবর্তনশীল জিনিস মেনে নিতে কষ্ট হয়? কেন?
বিজ্ঞান পরিবর্তনশীল না হলে তোঃ
– আপনি এখনো উট, ঘোড়া বা গাধায় টানা গাড়িতে করেই চলাফেরা করতেন
– এখনো কুঁড়েঘর বা তাবুতেই রাত কাটাতেন
– কবুতর বা আশ্বারোহী দিয়ে পাঠানো চিঠি দিয়েই যোগাযোগ রক্ষা করতেন
– ঝাড়ফুঁক এবং গাছের ছালা বাকল দিয়ে রোগ নিরাময় করতেন
– খড়কুটো, কাঠ দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে অন্ধকার দূর করতেন ।
– বাঁশ, কাঠ, গাছের গুঁড়ি দিয়ে বানানো নৌকায় করে পানিপথ পার হতেন
– আকাশ পথে লম্বা দূরত্ব পাড়ি দেয়া? সেটা একমাত্র জ্বীন পরীর পক্ষেই সম্ভব ভেবে দিনগুজার করতেন
আপনি কি ভেবেছেন বিজ্ঞান মানেই এক লাফে শিখরে পৌঁছে যাওয়া? না, বিজ্ঞানতো এভাবে কাজ করে না । বিজ্ঞান কাজ করে অতি ছোট ছোট ধাপে, এগোয় অল্প অল্প করে । একজনের চেস্টায় বা এক বইয়ের জ্ঞানে না, বরং হাজার হাজার বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ আর লাখো বইয়ের সম্মিলিত জ্ঞানে বিজ্ঞান তার একেকটা ধাপ পার করে । সরাসরি রকেট না, ঘোড়ার গাড়ি বাদ দিয়ে প্রথম কিভাবে ইঞ্জিন চালিত গাড়ি আসলো, সেটাও বিজ্ঞান । সরাসরি মোবাইল বা ইন্টারনেট না, কিভাবে কোন বার্তা বহনকারী মানুষ বা কবুতর ছাড়াই “Mr. Watson, come here, I want to see you.” কথাটা তারের মধ্য দিয়ে চলে গেলো সেটাও বিজ্ঞান । ক্যান্সারের চিকিৎসা না, প্রথম কিভাবে এন্টিবায়োটিক আবিষ্কার হলো সেই জ্ঞানও বিজ্ঞানেরই অন্তর্ভুক্ত । আর, আকাশে উড়ে বেড়ানোর সত্ত্বতো জ্বীন পরীর কাছ থেকে সেই কবেই মেরে দিছে রাইট ভ্রাতারা ।
বিজ্ঞানের মজাটাই এইটা, সদা পরিবর্তনশীলতা, নিজের জানার সীমানা নিয়ে কখনোই সন্তুষ্ট না হওয়া, প্রশ্ন করা, প্রশ্ন করা, প্রশ্ন করা । প্রশ্নের উত্তর জানা আছে? ওকে চমৎকার, আপনাকে অভিনন্দন । উত্তর জানা নাই? ওকে, জেনে নিলাম, নতুন একটা ব্যাপার জানা হলো, আরও চমৎকার, সুতারাং ডাবল অভিনন্দন ।
নিজের মানসিকতাকে পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেয়ার মতো করে গড়ে তুলুন । কারণ, পরিবর্তনই সৌন্দর্যের প্রতীক । অপরিবর্তনশীলতা? সে তো বোরিং !
চলুক বিজ্ঞানযাত্রা